সর্বশেষ


Friday, November 9, 2018

ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ারের ধারণা


আমরা জানি, যে ডিভাইসের মাধ্যমে পরিবর্তনশীন কারেন্ট বা এসি কারেন্ট কে ডাইরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি কারেন্টে রুপান্তর করা হয় তাকে রেকটিফায়ার বলে। 
রেকটিফায়ার বিভিন্ন প্রকারের হয়। যা চিত্রে উল্লেখিত। এদের মধ্যে হাফ ওয়েভ ব্রিজ এবং ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার উল্লেখ যোগ্য ।
আমি এই পর্বে ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দিবো যাতে আপনারা এর কার্যাবলি সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা অর্জন করতে পারেন।
ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার মূলত চারটি সিলিকন অথবা গ্যালিয়াম ডায়োড দ্বারা তৈরি করা হয় ।
চারটি ডায়োড একটি স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমারের সাথে নিম্নোক্ত চিত্রানুযায়ী সংযোগ করা থাকে।
.
রেকটিফায়ার সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে আমাদের ডায়োড সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
সাথে স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমার কি সেটাও জানতে হবে।



ডায়োড :
তাহলে চলেন আগে ডায়োড সম্পর্কে জেনে নিই।
ডায়োড হচ্ছে কারেন্টের একমুখী প্রবাহ। যা সেমিকন্ডাক্টর দিয়ে তৈরী হয়। বিশুদ্ধ সেমিকন্ডাক্টরের সাথে ভেজাল মিশ্রিত করে ডপিং প্রক্রিয়ায় ডায়োড তৈরী করা হয়। ডায়োড এর কাজ জানতে হলে আমরা নদীর স্রোতের দিকে তাকাতে পারি। আপনারা লক্ষ করলে দেখবেন নদীর স্রোত ঠিক একদিকে প্রবাহিত হয়। এবং বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয় না।
ঠিক তেমনি ভাবে ডায়োডের মধ্য থেকে কারেন্ট পজিটিভ হতে নেগেটিভ দিকে প্রবাহিত হয়। নেগেটিভ থেকে পজিটিভ দিকে প্রবাহিত হয় না। আর এমন অবস্থায় ডায়োডে ফরওয়ার্ড বায়াস বা পজিটিভ বায়াস সংঘটিত হয়। 
.
স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমার কে আমরা বাজারে এডপটার হিসাবেও ডেকে থাকি।
স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমার হলো উচ্চ ভোল্টেজ থেকে নিম্ন ভোল্টেজ এ রুপান্তরের ট্রান্সফরমার।
এই পেইজে ট্রান্সফরমার সম্পর্কে অনেক ধারণা দিয়েছেন আমাদের সম্মানিত এডমিন রা। আপনারা দেখে নিবেন।
তাহলে মোটামুটি আমরা ডায়োড ট্রান্সফরমার নিয়ে আলোচনা করলাম।
এখন চলুন রেকটিফায়ারের গঠন নিয়ে আলোচনা করি।
আমি পূর্বেই বলেছি ফুল ওয়েব ব্রিজ রেকটিফায়ারে একটি স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমার এবং এতে চারটি ডায়োড ব্যবহার করা হয়। নিম্নে (3) নং চিত্রে তার কানেকশন ডায়াগ্রাম দেখানো হয়েছে ।
এখন চলেন এই ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার কিভাবে কাজ করে তা দেখে নিই।
কার্যপ্রণালী : 
আমরা স্টেপ ডাওন ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী সাইডে বাসা বাড়ির লোড অনুযায়ী 230 vlt এসি ভোল্টেজ সাপ্লাই করি।
এসি ভোল্টেজ বা কারেন্ট কি তা আমরা অবশ্যই জানি। এসি ভোল্টেজের মধ্যে ঢেও এর মত তরঙ্গ দেখা যায়।
এই তরঙ্গকে আমরা সাইকেল বলে থাকি। এর মধ্যে পজিটিভ এবং নেগেটিভ হাফ সাইকেল থাকে, যা আমরা চিত্রে (1) নং ডায়াগ্রামে দেখতে পাই। 
প্রাইমারীতে 230 ভোল্ট প্রয়োগ করলে আমরা সেকেন্ডারিতে 6 ভোল্ট, 9 ভোল্ট, 12 ভোল্ট ইত্যাদি কম ভোল্টেজ পেয়ে থাকি। কিন্তু প্রাইমারীতে আমরা যখন এসি কারেন্ট প্রয়োগ করি তখন সেকেন্ডারিতেও আমরা এসি কারেন্টি পাই। এই এসি কারেন্ট দিয়ে আমরা সরাসরি ডিসি যন্ত্রপাতি চালাতে পারিনা। তাই আমাদের এসি কারেন্ট কে রেকটিফায়ারের মাধ্যমে ডিসি তে রুপান্তর করে নিতে হয়। 
চিত্রে D1, D2, D3,D4 চারটি ডায়োডের মাধ্যমে রেকটিফায়ার গঠন করা হয়েছে।
যখন সার্টিকে পজিটিভ হাফ সাইকেল প্রয়োগ বরা হয় তখন D1 ডায়োডের মধ্য দিয়ে ডায়োড নেগেটিভ দিকে মুখ করা থাকে বলে কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। কিন্তু D2 ডায়োড পজিটিভ দিকে মুখ করা থাকে ফলে এর মধ্য দিয়ে পজিটিভ হাপ সাইকেল প্রয়োগ করা হয়। 
D2 ডায়োড থেকে কারেন্ট লোড RL হয়ে D4 ডায়োডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সেকেন্ডারির নেগেটিভ সংযোগে চলে যায়। এর ফলে আমরা আউটপুটে পজেটিভ হাফ সাইকেল পেয়ে থাকি যা চতুর্থ চিত্রে দেখানো হয়েছে।
আবার যখন সার্কিটে নেগেটিভ হাফ সাইকেল প্রয়োগ করা হয় তখন D4 ডায়োডের মধ্য দিয়ে ডায়োড নেগেটিভ দিকে মুখ করে থাকে বলে কোনো কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। কিন্তু D3 ডায়োড পজেটিভ দিকে মুখ করে থাকে বলে এর মধ্য দিয়ে নেগেটিভ হাফ সাইকেল পজিটিভ হয়ে প্রবেশ করে। সেই পজিটিভ হাফ সাইকেল লোড হয়ে D1 ডায়োডের মধ্য দিয়ে সেকেন্ডারির পজিটিভ অংশের সাথে মিলিত হয়।
এতে করে আউটপুটে আবার পজিটিভ হাফ সাইকেল পাওয়া যায়। এভাবে চলতে থাকলে আউটপুটে ডিসি ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়। আউটপুটে যে ডিসি ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তা পিউর ডিসি থাকেনা , তাকে পালসেটিং ডিসি বলে।
এই পালসেটিং ডিসি কে ফিল্টার সার্কিটের মাধ্যমে ডিসিতে রুপান্তর করা লাগে।
রেকটিফায়ারের ফিল্টার হিসাবে সাধারণত ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়।
..
তবে কত ভোল্ট টান্সফরমারের জন্য কত মানের ক্যাপাসিটর লাগে এই মুহূর্তে বলতে পারছিনা বলে দুঃখীত । লেখাটা পড়ার পর কেউ জানলে বলে দিবেন আমিও উপকৃত হবো।
বি.দ্র. সময় সল্পতার কারণে তারাহুড়া করে লিখেছি লেখাটা যেহেতু আমার প্রতি সোমবারে পোস্ট করা লাগবে তাই এর পূর্বের রাতেই লেখা। ভুল ত্রুটি শুধরে দিবেন। আপনি যা জানুন কমেন্ট বক্সে জানান এবং কি জানতে চান কমেন্টে লিখে দিন উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটা ভালো লাগলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের দেখার সুযোগ করে দিন।
ইলেকট্রনিক্স শিখুন সহজ করে শিখানও সহজ করে। আগামী সোমবারে ক্লিপার সার্কিট নিয়ে আলোচনা করবো। যা বিভিন্ন জবে প্রায়ই আসতে দেখা যায়।
@Ashraful Alam Rumon

No comments:

Post a Comment