সর্বশেষ


Friday, November 16, 2018

জেনারেটর কী এবং কিভাবে কাজ করে?



জেনারেটর কী?

জেনারেটর আমরা কমবেশি সবাই চিনি।। জেনারেটর একটি ইংরেজি শব্দ। যার অর্থ- কোন কিছু উৎপন্ন করা বা জেনারেট করা। কিন্তু কী উৎপন্ন করা? পাওয়ার বা শক্তি উৎপন্ন করা। অর্থাৎ আমরা যদি কোন জেনারেটর চালুকরি তাহলে সেটি থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি উৎপন্ন হবে। যেহেতু এখানে মেকানিক্যাল পাওয়ারকে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ারে রূপান্তর করা হচ্ছে সেহেতু এটিকে আমরা রূপান্তরকও বলতে পারি।

জেনারেটরের গঠন:

জেনারেটরে মুলত দুটি মৌলিক অংশ থাকে। যে অংশ চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে তাকে বলা হয় ম্যাগনেটিক সার্কিট। স্থির থাকে বলে একে স্টেটও বলা হয়। আর যে অংশ তড়িৎ উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত সেটার নাম ইলেকট্রিক সার্কিট। এটা ঘুরন্ত বলে একে রোটর বলা হয়।




জেনারেটরের মুল কাঠামো কে ফ্রেম বা মুল বডি বলা হয়। যা জেনারেটরের বহিরাবরণ। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে খাঁজ কাটা থাকে। এই খাঁজের মধ্যে কৃত্রিম চৌম্বক তৈরির জন্য পরিবাহী বসানো থাকে। এই পরিবাহীতে বাইরে থেকে তড়িৎ সরবরাহ করে চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করা হয়। এই পদ্ধতিকে এক্সাইটেসন বলা হয়। এই চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরুকে পরস্পর লম্বভাবে আকর্ষণ করে। 

একে লাইন অফ ফোর্স বলা হয়।পরিবাহীকে এই চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে ঘুরানোর ফলে লাইন অফ ফোর্স পরিবাহী দ্বারা কর্তন হয়। এবং ভোল্টেজ ইৎপন্ন হয়। 



খুব ছোট মোটর বা জেনারেটরের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক চুম্বক ব্যবহার করা হয়। সাধারন ৬ ভোল্ট এর উপরের মোটর বা জেনারেটরের জন্য কৃত্রিম চৌম্বক ব্যবহার করা হয়।


চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে পরিবাহীকে একটি রোটরের মধ্যে বসানো হয়। এই চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে ঘুড়ানোর জন্য বাহিরে থেকে যান্ত্রিক শক্তি প্রয়োগ কার হয়। এই যান্ত্রিক শক্তিকে প্রিমুভার বলা হয়। ঘর্ষণজনিত বাধা এখানে যান্ত্রিক শক্তির অপচয়ের মুল কারন। রোটরকে বাধাহীন ভাবে ঘোরানো এবং ঘর্ষণ বাধা কমানোর জন্য দুই পাশে বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়।
জেনারেটর কিভাবে কাজ করে?

প্রইমুভার দিয়ে যখন রোটর কে ঘুরানো হয়,তখন ফ্যারাডের তড়িচ্চৌম্বক নীতি অনুসারে রোটর জড়ানো পরিবাহীতে বিভব (voltage)পার্থক্য দেয়। আমরা তো জানি বিভব পার্থক্য হলেই তড়িৎ প্রবাহ বা ইলেকট্রনের প্রবাহ হয়। মজার ব্যাপার হল যে অংশকে ঘুড়ানো হয়,তড়িৎ উৎপন্ন হয় সেই অংশেই।


উৎপন্ন তডিৎকে এক প্রকার ব্রাশের মাধ্যমে ঘুরন্ত অংশের বাহিরে আনা হয়। প্রইমুভার দিয়ে কয়েল যত বেশি জোড়ে ঘোড়ানো যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন তত বেশী হবে।

সবসময় যে চৌম্বক ক্ষেত্রই স্থির থাকবে তা নয়। হাই ভোল্টেজ উৎপাদনের সময় ঘুরন্ত পরিবাহী থেকে তড়িৎ বাহিরের সার্কিটে আনা ভীষণ ঝুকিপুর্ণ হয়ে দাড়ায়। এ কারনে পরিবাহীকে স্থির রেখে চৌম্বক ক্ষেত্রকে ঘুড়ানো হয়। এই মেশিনকে জেনারেটর না বলে অল্টারনেটর বলা হয়।

জেনারেটরে সাধারণত এসি তড়িৎ উৎপন্ন হয়। নানা সুবিধার জন্য একে ডিসি বিদ্যুতে রূপান্তর করে ব্যবহার করা হয়। তাপ এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা, এই সমস্যা সমাধানের জন্য ইন্টারনাল এক্সহাস্ট ফ্যান ব্যবহার করা হয়।

জেনারেটর আর মোটরের মৌলিক গঠনগত কোন পার্থক্য নেই। জেনারেটরে মেকানিক্যাল শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রুপান্তর করে। আর মোটর বৈদ্যুতিক শক্তিকে মেকানিক্যাল শক্তিতে রূপান্তর করে।

ছোট পরিসরের জন্য জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। আর বানিজ্যিকভাবে তড়িৎ উৎপাদনের জন্য অল্টানেটর ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে মুলত অল্টারনেটর ব্যবহার করা হয়।

বানানে ভুল হলে ক্ষমা করবেন, এর চাইতে ভালো তথ্য থাকলে তাকে অগ্রীম ধন্যবাদ । 

1 comment: